মিরু হাসান, স্টাফ রিপোর্টারঃ পূর্বেকার দিনে একসময় যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল চিঠিপত্র। কালের বিবর্তনের ফলে চিঠি লেখার মাধ্যমও পরিবর্তন ঘটে। সময়ের স্রোতে বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবনমান। সাথে চিঠি লেখার স্থানে দখল করল আধুনিক প্রযুক্তি মোবাইল ফোনের ক্ষুদে বার্তা, ই-মেইল,টুইটার,ফেসবুকের চ্যাটিং। প্রিয়জনদের সঙ্গে বলার জন্য কেউ কেউ বেছে নিচ্ছেন ইমু, ভাইভার, হোয়াটসঅ্যাপের মতো আধুনিক প্রযুক্তি।
বর্তমান যুগে চিঠিপত্র প্রায় বিলুপ্তি বললেই চলে।প্রিয়জনের একটি চিঠির জন্য কত অধীর আগ্রহে পথ চেয়ে বসে থাকত মানুষ। প্রিয় মানুষটার একটু খোঁজখবর জানার ব্যাকুলতায় হৃদয় যখন অস্থির হতো। তখন হয়ত ডাকপিয়নের বাই সাইকেলের বেলের আওয়াজ প্রশমিত করতো সেই অস্থিরতা।
প্রাত্যহিক জীবন মোবাইলে দখলে যাওয়ার আগে নিজের মনোভাব, আনন্দ-বেদনা ভাগাভাগি সব কিছুর একমাত্র মাধ্যম ছিল হাতের লেখা চিঠি আর হলুদ। । ব্যক্তিগত বা পারিবারিক জীবনের চাওয়া-পাওয়া গুলো স্থান পেত সেসব চিঠিতে।
দূর-দূরান্ত থেকে আনন্দ বেদনার খবর বয়ে নিয়ে আসতো এই চিঠিতে। প্রিয়জনের চিঠি, সন্তানের চিঠি, মা-বাবার চিঠি, স্বামী-স্ত্রীর চিঠি, প্রেমিকের চিঠির অপেক্ষার প্রহর গুনতো প্রেমিকা। চিঠি নাম লিখিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। হারিয়ে গেছে হলুদ খামের চিঠির যুগ। চিঠির সঙ্গে হারালো এক সময়ের জনপ্রিয় খোলা ডাক।
মেঠোপথ ধরে সাইকেলের বেল বাজিয়ে ঝোলায় চিঠি নিয়ে খাকি পোষাকে আসছে ডাকপিয়ন। দেখে প্রেমিকা, গৃহবধূ ও বাবা মা ছুটে যাচ্ছে পিয়নের কাছে। ছেলের চিঠি পেয়ে বাবা মায়ের চোখে আনন্দের অশ্রু, বাইরে থাকা স্বামীর চিঠি হাতে পেয়ে উচ্ছাসে কোমর দুলিয়ে দৌড়ে গিয়ে গাছের তলে বসে খাম খুলে আবেগে উদ্বেলিত হয়ে পড়ছে বধূ। গ্রাম বাংলার এমন চিরায়ত দৃশ্য এখন আর চোখে পড়েনা।
মনের ভাব বিনিময়ের জন্য অতীতের চিঠিকে ডিঙিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে মোবাইল এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে।