1. crimeletter24@gmail.com : crimelet_crimelet :
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সহকারী শিক্ষকদের হাতে প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিত স্কুলে পাঠদান ব্যহত নেকড়ে আতঙ্কে লালমনিরহাট লামায় জীনামেজু অনাথ আশ্রমে কম্বল বিতরণ করেন বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আটপাড়ার তেলিগাতী বৈদ্যনাথ হরেকৃষ্ণ একাডেমীরবার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত গলাচিপা সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষ কার্যক্রম উদ্বোধন শহীদ জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দুয়ায় ইয়াং স্টার একাডেমী ফুটবল একাডেমীর শুভ উদ্বোধন করেন রোটারিয়ান এম. নাজমুল হাসান নেত্রকোণা জেলার সাবেক যুবদলের সভাপতি মরহুম আল আমিন খান পাঠানের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত পঞ্চগড়ে জেলা জজসহ চার বিচারকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মেঘালয় থেকে আসা ৯০ লাখ টাকার গবাদিপশু চিনির চালান জব্দ খালেদদাদচৌধুরীসাহিত্যপুরস্কারঘোষণা, এবার পুরুস্কার পাচ্ছেন কবি ও সাংবাদিক হাসান হাফিজ

সহকারী শিক্ষকদের হাতে প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিত স্কুলে পাঠদান ব্যহত

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৬১ ০৫ বার পঠিত

আলিফ হোসেনঃ রাজশাহীর বাঘায় একটি শিক্ষা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা প্রধান শিক্ষককে পিটিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২০ জানুয়ারী সোমবার সকালে  উপজেলার মহদীপুর হিলালপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে স্কুলে পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। একই সঙ্গে শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ ঘটনায় গত ২১ জানুয়ারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বাদি হয়ে সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেনকে প্রধান আসামি করে ৭ জনের বিরুদ্ধে বাঘা থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেনের নেতৃত্বে রফিকুল ইসলাম, আব্দুল আওয়ালসহ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারী কথিত অভিযোগে প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছেন।

এঘটনায় পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে পাওয়া গেছে,সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল আওয়ালসহ কয়েকজন কর্মচারী জানান, প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের মোট ২৪ লাখ টাকার কোনো হিসাব কাউকে দেন না। এ নিয়ে গত সোমবার সকালে তার সঙ্গে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর মঙ্গলবার তিনি বহিরাগত লোকজন নিয়ে এসে আমাদের মারধর করেন। নিরুপায় হয়ে আমরা বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।

আর প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক নিয়োগ বাণিজ্যের ঘটনা সঠিক নয় দাবি করে বলেন, স্থানীয় কিছু মানুষের প্ররোচনায় কয়েকজন শিক্ষক এবং কর্মচারী আওয়ামী ট্যাগ দিয়ে আমার কাছে প্রায়ই টাকা চান। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি দেন। এদিন  স্কুলে এলে তারা আমাকে মারধর করে স্কুল থেকে বের করে দেন। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, শিক্ষকদের স্কুল ফাঁকি বন্ধে তিনি সকল শিক্ষকে নিয়মিত স্কুলে উপস্থিত ও ক্লাশ নেয়ার নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই কয়েকজন ফাঁকিবাজ শিক্ষক তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, স্কুলের  কতিপয় সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী ঘটিত ঘটনা ও মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। তারা এসব ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।

এদিকে প্রধান শিক্ষককে প্রহারের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে,উঠেছে  সমালোচনার ঝড়,বইছে মুখরুচোক নানা গুঞ্জন,অভিভাবক ও সচেতন মহলে দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন,এরা শিক্ষক নামের কলঙ্ক।কারণ যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো পবিত্র স্থানে প্রকাশ্যে প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতে পারে,তারা নৈতিকভাবে শিক্ষকতার যোগ্যতা হারিয়েছে,এদের চিহ্নিত করে চাকরিচ্যুত করা সময়ের দাবি। তারা বলেন, প্রধান শিক্ষকের অপরাধ বা অনিয়ম-দুর্নীতি থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যেতেই পারে, কিন্ত্ত কোনো অবস্থাতেই তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা যায় না।

এদিকে প্রধান শিক্ষকের করা লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, বিবাদী সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন (৩৭) আব্দুল ওয়াদুদ (৪৪), রফিকুল ইসলাম (৪৭), মকছেদ আলী (৪৮), আলম আলী (৬৫), শাহ আলম (৪৮) ও মোজাম্মেল হক (৩২)। বিবাদীগণ মহদীপুর হিলালপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহাকরী শিক্ষক এবং ৪ নম্বর বিবাদী বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী।গত ২০ জানুয়ারী সোমবার সকালে বিদ্যালয়ে দৈনিক সমাবেশে শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ ও জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় ভুল হওয়ায় ক্রীড়া শিক্ষককে উক্ত বিষয়ে আমি প্রতিবাদ জানায়। সেই সময় উপস্থিত শিক্ষকগণ আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হইয়া উঠে। বিবাদীরা ইতি পূর্বে তাহাদের ক্ষমতার প্রভাব খাটাইয়া বিদ্যালয়ে তাহাদের খেয়াল খুশিমত যাতায়াত করিত এবং স্কুলের নিয়মের বাহিরে চলাফেরা করিত। এই বিষয়ে আমি প্রতিবাদ করি একইদিন দুপুরে কয়েকজন শিক্ষার্থী স্কুল হইতে বাহিরে যাইতে থাকিলে আমি শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসা করি যে, তোমাদের এখন ক্লাস হবে তোমরা এখন বাহিরে যাচ্ছো কেন ? তখন শিক্ষার্থীরা আমাকে উত্তর দেয় যে, একটা করে ক্লাস হয় স্যার। সেই সময়  বিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষক এক নম্বর বিবাদীকে আমি বলি যে, আপনি ক্লাস নেওয়া বাদ দিয়ে বসিয়া আছেন কেন ? তখন সে আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হইয়া বলে যে, আমি ক্লাস নিতে পারবো না বলিয়া সে আমার সঙ্গে খারাপ ভাষায় কাথাবার্তা বলে। সেই সময় বিবাদীর সহিত আমার তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে সহকারী ধর্মীয় শিক্ষক ২নম্বর বিবাদী ও গণিত শিক্ষক ৩ নম্বর বিবাদীসহ অন্যান্য বিবাদীগণ আমাকে মারপিট করে এবং আমার দাড়ি ধরিয়া টানা হেঁচড়া করিয়া দাড়ি ছিড়িয়া ফেলে। সেই সময় বিবাদীরা আমার মাথার উপরে এবং বাম চোখের উপরে কিল ঘুষি মারপিট করিয়া ফোলা জখম করে আমাকে স্কুল থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে দেয়। বিবাদীরা ইতি পূর্বে আমার নিকট চাঁদার টাকা দাবী করিয়াছিল। আমি বিবাদীদের চাঁদার টাকা না দেওয়ায় উল্লেখিত বিবাদীগণ পরিকল্পিত ভাবে বর্ণিত ঘটনা ঘটাইয়া এবং আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করিয়াছে। পুনরায় আমি উক্ত বিদ্যালয়ে গেলে বিবাদীরা আমাকে মারধর করিবে বলিয়া বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করিতেছে।

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাম্মি আক্তার বলেন, উভয় পক্ষের পৃথক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ