মিরু হাসান, স্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ার আদমদীঘিতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মাহফুজুল হক টিকনসহ উপজেলা বিএনপির তিন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাতে বগুড়া জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক এ্যাড. কে. এম হুমায়ুন কবিরের দলীয় প্যাডে স্বাক্ষরিত পৃথক পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়।
বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আলী আজগর হেনা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের মধ্যে চাঁদাবাজ ও অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িতদের সম্পর্কে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। দলে কোন অপরাধীদের স্থান হবে না।
যাদেরকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন- জেলা বিএনপির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির সদস্য মাহফুজুল হক টিকন, উপজেলা বিএনপি সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম মধু ও ফরিদুল হক মুক্তা।
মাহফুজুল হক টিকনকে দেওয়া নোটিশে বলা হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশনা লংঘন করেছেন। আপনার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। তাই দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, সেটা এই নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর জন্য বলা হলো।
অপরদিকে কামরুল ইসলাম মধু ও ফরিদুল হক মুক্তাকে দেওয়া নোটিশে বলা হয়, আপনারা মামলা রুজু না করেই আপনাদের ব্যক্তিগত ফেসবুকে আসামীদের নাম প্রকাশ করেছেন। এতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয় এবং সেইসঙ্গে আপনাদের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। তাই দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, সেটা এই নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর জন্য বলা হলো।
জানা যায়, আদমদীঘিতে গত আগষ্ট মাসে ২১ ও ২৫ তারিখে বিএনপি ও যুবদল অফিস ভাংচুর ও বিস্ফোরণ আইনে অজ্ঞাতসহ ছয়শত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নামে থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়। গ্রেপ্তার আতঙ্কে গা-ঢাকা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আর এই সুযোগ কাজে লগিয়েছে কয়েকজন বিএনপির নেতা। আওয়ামী লীগের নেতাদের মামলা সংক্রান্ত ঘটনায় ভয়ভীতি ও হুমকি-ধামকি দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় অভিযোগ উঠে এসেছে৷
কয়েকদিন আগে জেলা বিএনপির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির সদস্য মাহফুজুল হক টিকনের বিরুদ্ধে শামিম নামের এক ব্যক্তিকে মামলা থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলে ৩০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ আসে। ইতিমধ্যে তাদের কথোপোকথনের একটি অডিও রেকর্ড ও ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগে ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে তার বিরুদ্ধে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি/ সাধারণ সম্পাদক বরাবর চাঁদাবাজির একটি লিখিত অভিযোগ দেন শামিমের মামা শফিকুল ইসলাম।
এদিকে উপজেলা বিএনপি সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম মধু ও সহ-সভাপতি ফরিদুল হক মুক্তা তাদের বিরুদ্ধে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুকে মামলা রজু না করে আসামীদের নাম প্রকাশ করেন। এতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয় এবং সেইসঙ্গে তাদের দুইজনের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে। এতে বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন তাঁরা। ফলে এমন কর্মকান্ডে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি’র জেলা সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর হেনা।
বগুড়া জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক এ্যাড. কে. এম হুমায়ুন কবির জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশনা তাঁরা লঙ্ঘন করেছেন। চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। যা দলের জন্য হানিকর ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল তাদেরকে কারণ দর্শানো নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় সাংগঠনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।