1. crimeletter24@gmail.com : crimelet_crimelet :
বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
বিস্ফোরক মামলায় জামিনপ্রাপ্ত বিডিআরের ১৭৮ সদস্যের তালিকা প্রকাশ বাঘায় স্কুলের প্রধান শিক্ষককে মারপিট জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্ম দিন উপলক্ষে গলাচিপায় দোয়া অনুষ্ঠিত গলাচিপায় সুশীলনের অর্থায়নে দুর্যোগকালীন সরঞ্জামাদি বিতরণ মৌলভীবাজারে ডিবির অভিযানে ১৮৮ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ, আটক ২ গোপালগঞ্জে কাশিয়ানীতে দুটি মন্দিরে আগুন নীলফামারীতে প্রচেষ্টা সামাজিক ফাউন্ডেশনের শীতবস্ত্র বিতরণ জুড়ীতে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবাধে কাটছে টিলা রংপুরে জমিজমা দ্বন্দ্বে দলবদ্ধ হামলা বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মারামারি, নারীসহ আহত ৭

পাঁচ মাসেও ফেরেননি তিন শিক্ষক পাঠদান ও প্রশাসনের কাজ ব্যাহত

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২৫ ০৫ বার পঠিত


মিরু হাসান,স্টাফ রিপোর্টারঃ ছাত্র-জনতের অভ্যুথানের পর থেকে বগুড়ার আদমদীঘিতে কয়েকজন শিক্ষক এখন পর্যন্ত কর্মস্থলে যোগ । আর্থিক অনিময়সহ না অভিযোগ থাকা এসব শিক্ষকরা সহকর্মী ও স্থানীয় লোকজনের কাছে আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারি কর্মকাণ্ডের দোসর হিসেবে পরিচিত।
সেসময় তাদের ক্ষমতার দাপটও ছিল চোখে পড়ার মত। এখন গা-ঢাকা দিয়ে থেকে কেউ কেউ বারবার চিকিৎসাজনিত ছুটি বাড়িয়ে যাচ্ছেন।
অনুপস্থিত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এখানো পর্যন্ত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় কোনো আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে। শুধু তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েই যান্তি দিয়েছে তারা। এই সুযোগে তাদের অনুপস্থিতে
শিক্ষায়তনে পাঠদানসহ প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। নাশকতা মামলার আসামি ও একই সঙ্গে দুটি বিদ্যালয়ে চাকরি করায় অভিযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শেখ সাদি সাড়ে পাঁচ মাস ধরে কর্মস্থলে আসেন না।
আত্মগোপনে থেকে বারবার চিকিৎসাজনিত্ব শুটি চলছেন তিনি। একইভাবে গত বছরেরখ থেকে উপজেলা সদরের রহিম উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান ও আইপিজে পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনজু আরা বেগম সাড়ে পাঁচ মাস যাবৎ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত। এর মধ্যে কলেজের অধ্যক্ষ ও হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি এবং আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ।
জানা গেছে, ৫ আগস্ট আগস্ট আওয়ামী আওয়া সরকার পতনের পর থেকে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ছাড়াই অনুপস্থিত আদমদীঘির একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শেখ সাদি, একটি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান ও একটি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনজু আরা বেগম। এর মধ্যে সহকারি শিক্ষক শেখ সাদি দিব্যি সুস্থ থেকেও বারবার চিকিৎসাজনিত ছুটি নিয়ে গা-ঢাকা দিয়ে আছেন। এ পর্যন্ত মোট তিন দফায় তিনি চিকিৎসাজনিত ছুটি নিয়েছে বলে বিদ্যালয় ও উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে এক সঙ্গে দুটি বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকদের ড্রোনেশনের প্রায় ৮০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ছিল শিক্ষক শেখ সাদি ও বিদ্যালয়ের সভাপতি আবির উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সহকারি শিক্ষক শেখ সাদি ৫ আগস্টের পর থেকে কিছু দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিল। এরপর তার বিরুদ্ধে থানায় নাশকতা মামলা হলে অদ্যবধি পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। ৩ দফা চিকিৎসাজনিত ছুটির আবেদন করে বর্তমানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সহকারি শিক্ষক শেখ সাদি। আওয়ামী লীগের শাসনামলে তার ক্ষমতার দাপটও ছিল চোখে পড়ার মতো।
উপজেলা সদরের রহিম উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান ও আইপিজে উচ্চ বিদালয়ের প্রধান শিক্ষক মনজ আরা বেগম চাকরি বাঁচাতে ৫ আগস্টের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর চিকিৎসা ছুটির আবেদন করেন। কিন্তু তা আজও মঞ্জুর না হলেও তারা কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন। একইভাবে অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানও চিকিৎসা ছুটি চেয়ে আবেদন করলে তা মঞ্জুর হয়নি।
তাদের মধ্যে অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান উপরেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক, অপর দিকে প্রধান শিক্ষক মনজু আরা বেগম আদমদীঘি উপজেলা মহিলা আওয়ামী

লীগের সভাপতি ও বগুড়া জেলা পরিষদের সদস্য। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে তারা লাপাত্তা। আত্মগোপন থাকায় দুজনেই প্রতিষ্ঠানে কার্যত অনুপস্থিত। স্ব-পদে বহাল।
রহমানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পাওয়ার অভিযোগ এনে ১২ আগস্ট উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবক ও সচেতন মহলের ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়। সে সময় তার বিরুদ্ধে দশটি অভিযোগ তুলে স্থায়ী বহিস্কার চেয়ে ইউএনও ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির কাছে একটি লিখিত আবেদন দেওয়া হয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে এখনো দৃষ্টান্তমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
অভিযোগগুলো বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান, প্রধান শিক্ষক মনজু আরা বেগম ও সহকারি শিক্ষক শেখ সাদির ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। তবে প্রতিবারই তাদের ফোন বন্ধ থাকায় তাদের মন্তব্য জানান সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে আদমদীঘি বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজা বেগম বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শেষ সাদি চলতি লতি বছরে প্রথম দফায় ২৯ আগস্ট এক মাসের জন্য একটি চিকিৎসাজনিত ছুটির আবেদন করেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় ৩০ অক্টোবর। থেকে পুনরায় এক মাসের জন্য আবেদন করেন। পরবর্তীতে তৃতীয় দফায় ডাকযোগে ছুটির আবেদন করলে আমরা তা গ্রহণ করিনি। এরপর থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত।’
আদমদীঘি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম প্রধান জানান, আদমদীঘি বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শেখ সাদি ৩ দফায় চিকিৎসাজনিত ছুটির আবেদন করেন। কিন্তু এ পর্যন্ত তার কোনো ছুটিই মঞ্জুর হয়নি। তার চিকিৎসাজনিত ছুটির সমস্ত কাগজপত্র বগুড়া ডিপিও অফিসে পাঠানো হয়েছে।
শেখ সাদির বিরুদ্ধে থানায় নাশকতা মামলার বিষয়ে জানতে চাইল শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘মামলার ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নাই। তিনি (শেখ সাদি) যদি ওই মামলায় গ্রেপ্তার হন, তখন আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব।’
জানতে চাইলে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আফরোজ বলেন, ‘দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শেখ সাদির ব্যাপারে জানতে। চাইলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষক শেখ সাদির চিকিৎসাজনিত ছুটির আবেদন ও ডাক্তার কর্তৃক ব্যবস্থাপনাপত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট পেলে আমরা ব্যবস্থা নিব।##

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ