মিরু হাসান, স্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে সেচের পানির দাম বেশি চাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। নীতিমালার থেকে বিঘাপ্রতি চাহিদা করছে দ্বিগুণ। ফলে পানি নিয়ে সংশয়ে চাষীরা। উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের মালশন ও পাথরকুটা গ্রামের ফসলি মাঠে সেচ পাম্পের দায়িত্বরতদের নামে এমন অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টির দ্রুত পদক্ষেপের জন্য সোমবার বিকেলে তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা যায়, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় আমন ও ইরি মৌসুমে চাষাবাদ করেন প্রান্তিক কৃষকরা। এই চাষাবাদের মাধ্যমে তারা জীবিকা নির্বাহ করেন। এজন্য উপজেলা কৃষিদপ্তর থেকে তাদের নামে তালিকা করে সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়। অথচ সেচের পানি ব্যবস্থা নিয়ে কমিটির তেমন গুরুত্ব দেখা যায়না। গুরুত্বহীনতায় পাম্পের মালিকদের নীতিমালা প্রয়োগ করাতে বার্থ্য হন তারা। একারনে প্রতি বছর কৃষক পানির মূল্য নিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হন। জোর পূর্বক নির্ধারিত মূল্যের থেকে ৫০০ টাকা বেশি আবার কখনো দ্বিগুণ টাকা দাবী করেন সেচ পাম্পের দায়িত্বরতরা। ফলে চাষাবাদ শেষে লাভের মুখ দেখতে পাননা কৃষকরা। সরজমিনে পরিদর্শন করে উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়ন, সদর ইউনিয়ন, সান্তাহার ইউনিয়ন ও সান্তাহার পৌরসভা এলাকায় এমন চিত্র দেখা যায়।
সান্তাহার পাথরকুটা গ্রামের বছির ও আফাজ উদ্দীন জানান, মাঠের জমিতে ইরি মৌসুমে আবাদ করার জন্য সেচের পানি দিতে বলি পাম্বের পরিচালক জনি ও সাজুকে। পানি দেওয়ার আগে বিঘাপ্রতি ২৫০০ টাকা দাবী করেন। অর্থাৎ প্রতি শতকে ৭৬ টাকা নিবে। এর কম হলে পানি দিবেনা মর্মে জানিয়ে দেয়। তার কথায় আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি। অথচ গত বছরে প্রতি শতকে ৪২ টাকা করে ১৪০০ টাকা ছিলো। এবছরে বিঘাপ্রতি ১০০০ হাজার টাকা দাম বাড়িয়েছে পাম্প পরিচালকরা। কারন জানতে চাইলে জিনিসপত্র দাম সহ নানা অজুহাত দেখান। সরকার বিধি অনুসারে শতক প্রতি ৪২ টাকা ধরা হয়েছে। কিন্তু কে মানে কার কথা। এমন স্বেচ্ছাচারী আচরণে হতবাক সকলেই।
একই সুরে কৃষক জুলফিকার আলী জানান, চাষাবাদ করে সংসার চলে। বীজ,সার, কীটনাশক ও শ্রমিক খরচ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরপর সেচের বিঘাপ্রতি ২৫শ থেকে ২৭শ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এরআগে ১৫শ ছিলো। দিনদিন এদের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। তাদের চাহিদা মতো টাকা না দিলে জমিতে পানি দিবেনা বলেছে। বিকল্প উপায় না থাকায় পানির জন্য যেনো একরকম জিম্মি চাষীরা। এজন্য আবাদ করতে বিলম্ব হয়।
সেচ পাম্পের পরিচালক জনি ও সাজু জানান, বিদ্যুৎ বিল আসে অনেক। তাছাড়া শ্রমিক খরচ রয়েছে। তাদের বলেছি বিঘাপ্রতি ২হাজার টাকা দিলে লাভ তো দূরের কথা গায়েগায়ে যাবে। লোকসান করে তো আর পানি দিতে পারিনা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ জানান, সরকারিভাবে সেচের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এর বেশি নেওয়া যাবেনা। কয়েকটি এলাকা থেকে অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।